দেশান্তর



এই কবিতাটা আশিকুর রহমান ভাই-এর জন্য| এই মার্কিন মুলুকে পা দিয়ে এয়ার-পোর্ট এ যে মানুষটার সঙ্গে প্রথম আলাপ হল, তার সাথে বাংলাতে কথা বলতে পারবো ভাবিনি| আমাকে রিসিভ করতে এসেছিলো আমার-ই  ল্যাব এর যে সহ-গবেষক, সেই বাংলাদেশী মানুষটার জন্য পনেরো হাজার মাইল দুরেও সবসময় মাটির গন্ধ পাই....


অনেকদিন হয়ে গেল, 
কপালে খুব চেনা একটা হাতের স্পর্শ পাইনি |
হাতে পায়েসের বাটি ধরিয়ে 
খুব প্রিয় একটা গলার স্বর বলেনি,
"নাও, এটা গিলে উদ্ধার করো আমাকে"|
মাটির গন্ধে মেলা দেখা হয় না বহুদিন|
ছোটবোনের রাখী আমার হাতে
বাঁধা থাকে না আর, 
যমের দুয়ারে কাঁটা পড়ে,
আর আমি পথ হাঁটতে হাঁটতে আজ বহুদূরে ...
টিফিনের পয়সা জমিয়ে
ভাইয়ের জন্য লাটাই কিনে গর্বিত মুখে

বাড়ি ফিরেছিলাম সেই কবে,
মনেই পড়েনা ভাইয়ের সেই হাসিটুকু  |
সেই যে মানুষটা আমার জন্য
কলেজ শেষে  দাঁড়িয়ে থাকতো 
একসাথে একটু ঘুরে ঘুরে 
বাড়ি ফিরবে বলে,
সেও অপেক্ষা করেনি বহুদিন|
অথচ 
আজো পিঠে-পুলির গন্ধে 
ওদের আঙিনা ভরে ওঠে,
আজ-ও মেলা বসে,
ধুলো পায়ে হাঁটে ওরা সব,
তবু কেউ আমাকে ডাকেনা...


চোখের জল আড়াল করতে
বেসিনে কলের সামনে বেশিক্ষণ 
মাথা নিচু করে থাকতে হয়|
নিজেকে বলি,
ওদের দেখিয়ে দেবো,
আমার বিন্দু বিন্দু ঘামেও 
কালবৈশাখী নামবে একদিন বিকেলে,
সেদিন আমিও দেশে ফিরবো,
বন্ধুদের সাথে চিৎকার করবো
ঘুরন্ত নাগরদোলার ওপর থেকে ,
লোকাল ট্রেনে ঝালমুড়ির দাগ 
লেগে থাকবে আমার ঠোঁটের কোনে |

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

tukro shorot-1

কুঁচো-কাঁচা দুঃখকথা......

pajore somudrer dheu .....