পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০১৭ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ছেঁড়া ইতিহাস - ৪

ছবি
কিছু কিছু মানুষ থাকেন যারা আপনভোলা অথচ একটু বেশি একগুঁয়ে| বাকি জগতসংসারে কে কী ভাবলো, কে কী বললো তা নিয়ে তাঁদের কোনো মাথাব্যথা নেই| এর থেকেও ব্যাপারটা ভয়ংকর হয় যখন তাঁরা সাধারণ বুদ্ধিসুদ্ধিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে কিছু একটা করবেন বলে মনস্থির করে বসেন | বাকি লোকজন তাঁকে যতোই বোঝানোর চেষ্টা করুক না কেন, তিনি শুনবেন না| কিছুদিন পর হাল সবাই ছেড়ে দিয়ে মানুষটাকে পাগল-ছাগল আখ্যা দিয়ে বিদায় নেয়| মজার ব্যাপার হলো, সেই পাগলটা কিন্তু হাল ছাড়ে না| সুইজারল্যান্ডের হেনরি ডুনান্ট সেই প্রকৃতির মানুষ| তিরিশ বছর বয়েস| বন্ধু বান্ধব বিশেষ নেই| নেহাত গিনিভা শহরের এক সভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম বলে তাঁকে কেউ ঘাঁটায় না| দেশের নাম করা কলেজ কেলভিন থেকে ড্রপ আউট| অবশ্য ড্রপ আউট বলা ভুল, আসল সত্যটা অনেকেই জানেন | পরীক্ষায় বারবার খারাপ গ্রেড পেতেন| তাই কলেজ থেকে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে| এরপরে একটি ব্যাঙ্কে কিছুদিন কাজকর্ম করেছিলেন| বছর পাঁচেক এই ব্যাঙ্কে কাজ করার সুবাদে, তাঁকে ইউরোপের নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াতে হতো| হঠাত একদিন ব্যাঙ্কের চাকরিটি ছেড়ে তিনি সেই ভ্রমনকাহিনী নিয়ে একটা বই লিখে ফেললেন| সেই লেখাগুলো ছিল ...

ছেঁড়া ইতিহাস - ৩

ছবি
ম্যাকলিড সাহেবের ট্রেনের গল্প লিখে অনেক বাহবা কুড়োলাম| তাই 'বার' খেয়ে বেহালা নিয়ে আবার লিখছি  :) ছোটবেলা থেকেই ভাবতাম এ জায়গাটার নাম বেহালা কেন? বেহালা একটা বাদ্যযন্ত্রের নাম, ভি জি যোগ কিংবা এল শংকরের বাজানো বেহালার করুণ সুরে বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে| কিন্তু খামোখা একটা কোলাহলমুখর জ্যান্ত শহরতলির নাম বেহালা রাখার কোনো মানে হয়! বেহালা চির-উন্নয়নশীল দেশ| এই দেখা গেলো রাস্তাজুড়ে তারাতলার ফ্লাইওভার হয় তো তারপরেই গোটা বেহালার রাস্তা কেটে আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন| সেসব কাটাছেঁড়া শেষ হতে না হতেই মেট্রো| একটা উন্নয়নের ধাক্কা সামলে যে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নেব, সে উপায় নেই বেহালাবাসীর| তাই ছোটবেলা থেকেই দেখছি এ জায়গাটার বড় বেহাল দশা| বহুদিন পর্যন্ত আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল “বেহাল” থেকেই জায়গাটার নাম হয়েছে বেহালা| বেহালা জায়গাটার অস্তিত্ব কলকাতা শহরের অনেক আগে থেকে রয়েছে| কতদিন আগে? তা ধরুন আজ থেকে আটশ’ বছর আগের কথা| লখিন্দরের শবদেহ নিয়ে বেহুলার ভেলা গাঙুড় নদী দিয়ে ভেসে গিয়েছিল সাগরের পথে| সে যুগে নদীগুলোর গতিপথ ছিল অন্যরকম| এখনকার হুগলি নদীর গতিপথ তখন এইরকম ছিল না| আদিগঙ্গা বলে আম...

ছেঁড়া ইতিহাস - ২

ছবি
বেহালায় বাড়ি আমার| ছোটোবেলা থেকে শুনে এসেছি অনেকেই জেমস লং সরনীকে রেললাইন বলতেন| উত্তর থেকে দক্ষিণে কলকাতা শহরের বুক চিরে চলে গেছে ন্যাশনাল হাইওয়ে ১১৭, যাকে সবাই ডায়মন্ড হারবার রোড নাম চেনেন| ডায়মন্ড হারবার রোডের সমান্তরাল চলে গেছে শহরের ব্যস্ততম রাস্তাগুলোর মধ্যে অন্যতম এই জেমস লং সরণী| রিক্সাচালক, অটোচালক বা স্থানীয় লোকজন খামোখা একটা আস্ত রাস্তাকে রেললাইন কেন বলতেন আমার মাথায় ঢুকত না| ভাবতাম সত্যি বুঝি ট্রেন চলে এখানে| কিন্তু বিশ বছরেও এই রাস্তার ধরে কাছে কোনো ট্রেন দেখিনি| কিন্তু ট্রেন চলতো বটে এককালে| এই রাস্তা তখন ছিল ন্যারো গেজ রেল লাইন| "কু ঝিক ঝিক" শব্দ করে কালো ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে চলে যেত কয়লার ইঞ্জিন| কালীঘাট থেকে ফলতা পর্যন্ত এই রেললাইনটি চালাতো ম্যাক্লয়েড লাইট রেলওয়েজ কোম্পানি| লোকে বলতো ম্যাকলিড সাহেবের ট্রেন| তা সেই ম্যাকলিড সাহেবের কোম্পানিই ১৯১৭-র ২৮ মে তারিখে প্রথম কলকাতার বুকে এই রেলগাড়ি চালাতে শুরু করে। রেল চলত কালীঘাট থেকে ফলতা পর্যন্ত। কালীঘাট স্টেশন বলে কোনো স্টেশন ছিলনা| মাঝেরহাট পর্যন্ত এসে ট্রেন নামিয়ে দিতো যাত্রীদের| সেখান থেকে পায়ে হেঁটে লোকে যে...