পোস্টগুলি

2013 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

এক গাঁয়ে

আমরা দুজন এক শহরে থাকি সেই আমাদের একটুখানি সুখ তাহার কাছে শহর ছিল ফাঁকি  আমার শহর অনেকগুলো মুখ  আমরা দুজন একটি ঘরে বাস আরো কিছু দুঃখ ছিল বুকে  বেঁচে থাকার ক্লান্তি বারোমাস  সুখের চাবি হারানো সিন্দুকে  আমরা দুজন এক হেঁসেলে খাই   সকাল হয় পুরনো ব্যস্ততায়  হঠাত করে ভিড় কুড়োতে যাই  পেটের দায়ে আদিম কলকাতায়  আমরা দুজন এক ভাড়াতে বাঁচি   সেই আমাদের দুমুঠো সঞ্চয়  পকেট জুড়ে ক্লান্ত খোলামকুচি  রাতবিরেতে অন্ধকারের ভয়  আমরা দুজন পাশাপাশি বসি  সন্ধ্যেবেলায় দখিনমুখো আকাশ  চায়ের কাপে চুমুক দিতে আসি  রোজনামচার টুকরো অবকাশ  আমরা দুজন এক ঠিকানার লোক  গৃহস্থালী সাজিয়ে রাখি তাই   তাহার যখন সিরিয়ালে চোখ  আমার হাতে সিগারেটের ছাই  আমরা দুজন ঘেন্না নিয়ে লড়ি   কে বা কাহার রাগের হিসেব রাখে   কাঁপতে থাকে বরগা এবং কড়ি  শব্দগুলো নগ্ন হতে থাকে  আমরা দুজন চিলচিত্কার করি...

দ্রোহজ

ছবি
তখন আমার জীর্ণ ঘর-বাড়ি কুড়িয়ে আনছি ধূসর কিছু ইঁট জাহাজ ছাড়বে দোদুল্যমান ভোরে নকশালবাড়ি থেকে ওয়ালস্ট্রীট তখন আমার সাত-সতেরো কাজ ঘামে ভেজা শার্টের কলারখানি তর্ক হতো স্লোগানে সোচ্চার শহর জুড়ে ব্যস্ত কানাকানি তখন ছিল ঢাকুরিয়ার লেক ফুটপাথে তার উপচে পড়া জল বৃষ্টি নামে প্রেমিকাদের বাড়ি কান্না ছিল বুকে অনর্গল তখন আমার বসন্ত উত্সব মহীন থেকে পিট্ সীগারের গান মা বাজাতেন তুলসিতলায় শাঁখ আজানে মেশে ব্যর্থ অভিমান তখন ছিল রক্তে কালবেলা কাঁটাপুকুর মর্গে ভীষণ শীত মনের মধ্যে অশান্ত কল্লোল বুকের ভেতর রবীন্দ্রসঙ্গীত তখন ছিল ধোঁয়া ছাড়ার দিন বাসের ভীড়ে ট্রাফিক সিগনাল তখন ছিল অলিপাবে ভীড় নিষিদ্ধ পথ শহরে জঞ্জাল এসব কথা এখনো ভিড় করে আমার এখন বাতানুকুল ঘর এসব কথা এখনো চোখের জল আমার এখন জীবন তেপান্তর

ফ্রেন্ডশিপ ডে

ছবি
বন্ধুত্বের দিন  ভোরের ক্যান্টিন   আলোর ছলাকলা  অনেকটা পথ চলা  ইকিরমিকির হুসস তাকালেই দিলখুশ  হাফপ্যান্ট, রোলকল  খেলতে যাবি চল  প্যাস্টেল চারকোল  টিফিনবাক্স খোল  মনিমেলার মাঠ  রাস্তা চিনে হাঁট  আচারআলার ডাক  দু-পাঁচ টাকাই রাখ  ক্রিকেট খেলার গেরো  ছয় হাঁকালেই হেরো  বল পড়েছে ড্রেনে  তুই-ই দিবি এনে  এইবারে মারপিট  পাটকেল আর ইট  কাল বিকেলে তাই খেলতে আসিস ভাই  কাল থেকে হইচই কে সি নাগের বই  কান ধরে তুই দাঁড়া  হাজারটা ভ্যান্তারা  অমুক স্যারের ক্লাস  তোরাও সাথে যাস  তমুক মেয়ের চুল  সকলেই মশগুল  নিষিদ্ধ সব কাজ  করতে হবে আজ  ঢেউ জাগানো বই  আমরা তো পড়বই  বড় হবার দিন  একটু নিকোটিন  সবার কাঁধে হাত  দৌড়বে দিনরাত  সকালবিকেল ফোন  তোদের-ই গুঞ্জন  নতুন জানাশোনা  বসন্ত আলপনা  সান্ধ্য ...

মনের মতো ভুল ২

আর ভাল্লাগে না... অনেক হল! খুব দরকারি একটা কাগজে ভুলভাল কার্টুন আঁকতে ইচ্ছে করে, বস'কে খিস্তি মেরে ইমেল করতে ইচ্ছে করে, হার্ডডিস্ক থেকে জরুরি ফাইলগুলো কন্ট্রোল-ডিলিট মারতে ইচ্ছে করে, প্রেমিকাকে বলতে ইচ্ছে করে 'তোমার মতো কুৎসিত মহিলা আমি দুটো দেখিনি', ইচ্ছে করে মোক্ষম সময় ইন্টারনেটের তার'টা একটা কাঁচি দিয়ে কেটে দিতে... কিন্তু পারি আর কই? "আমি ভাল আছি, আপনি ভালো আছেন তো?"-টাইপ ভালো থাকাটাই অভ্যেস হয়ে গেছে। আমার এখন ভুল করতে ইচ্ছে করছে, একটা মনের মতো ভুল !!! অনেক হল খুঁতখুতেমি অনেক মেপে বাঁচা নিখুঁত সুরে গান গাওয়া আর সঠিক তালে নাচা অনেক দিলে হাততালি তাও অনেক খেলা বাকি কাজের দিনে কাজলাদিদি শোলক বলে নাকি ? তবুও আমি নিখুঁত কাজে নিখুঁত কথা বলা কোথাও কোনও ভুল হবে না ভীষণ মেপে চলা নিখুঁত হবার স্পষ্ট দাবী কষ্ট বিজয় মিছিল সত্যি বলছি নষ্ট কাজের অনেক গোঁজামিল তাই তো এখন সুযোগ খুঁজছি ফুটুক বুনো ফুল সময় হলেই করব একটা মনের মতো ভুল

তারাদের কথা

এসো  কিছু করি  -----------------------     (1) নাছোড়বান্দা স্বপ্নগুলোর হাত ধরে সে রাস্তা পেরোয়! এগোতে চায়? উঠোনজুড়ে অবিরগোলা দীর্ঘশ্বাস আর এদিক-ওদিক বেনোজলের সোঁদা বাতাস লড়াই করার গল্প শোনে, একলা বসে মাদুর বোনে | আকাশছোঁয়া ইচ্ছেডানা তার কথা তো আর বলে না! একটা থালায় সেদ্ধ আলু ,একমুঠো ভাত এইটুকু থাক ; হ্যারিকেনের টিমটিমে গান রাত জাগে, তবু "তেল কিনতেও পয়সা লাগে..." ছেঁদো চালে বৃষ্টি পড়ে ভিজিয়ে দেওয়া বালিশ-তোষক একলা ঘরে - এমনি করেই রোজনামচা এগিয়ে চলে, কান্নাগুলোই বেঁচে থাকার খবর বলে | বন্যা এসে ভাঙা বেড়া ভাসিয়ে নেবে, তবু লড়াইটাতো লড়তে হবে! ------------------------------ ------------------------------ ------------------- (2) মেঠোপথ, অন্ধকার, পাখিদের চোখ এখনো বন্ধ, সভ্যতা মানে কি খবরের কাগজ? এখানে স্থানীয় সংবাদ মানে বন্যা আর ভোট... কান্না এখানে সোঁদা দেওয়াল পেরোনোর রোজনামচা- তবুও কানাকানি হয় রোজ মাঝরাতে, কেরোসিনের আলোতে কারা যেন ছাপা অক্ষর থেকে রোদ্দুর খুঁজতে বেরোয় ; জানাজানি হয় "তারাদের কথা"|

তবা টেক সিং

ছবি

একুশে ফেব্রুয়ারী

সম্মিলিত বৃষ্টির আলোক মিছিলে  হাঁটছে একুশের প্রথম প্রভাতফেরী  আমরা কেউ ভিজছি আপাদমস্তক  কেউ শিল কুড়োচ্ছি আলগোছে কুঁচবরণ কন্যা তার মেঘবরণ চুল  ভুল করে কেন এদিক ঘুরে তাকায়? "কিস্যু হবে না কোনোদিন" লালাসিক্ত পানপরাগ রাজপথে লিটল ম্যাগাজিনের স্টলে ঘুরে ঘুরে চটি বই বেচে বেঁচে আছে কোনমতে সাহাবাগ উত্তাল হতে শেখে রক্ত গরম ছিল, সীমানা পেরোচ্ছে ফেসবুক থেকে বাসন্তী রঙ ঢেউ অবসর ঠিকানা হারালো ঠিক সময় অনসাইটে ঝলমলানো সুর দাওয়ায় বসে মুড়ী-চানাচুর খাবে স্টেশনে তখন গরম চায়ের ভাঁড় অনেক টাকা মাইনে পেল ছেলে প্রবাস থেকে চিঠি কড়া নাড়ে "মা, তুমি কেমন আছো?"

গল্প : ছেঁড়া ক্যাম্পাস

ছবি
 

বহুযুগের ওপার থেকে

ছবি
আমার লেখা একেবারে প্রথম কবিতাগুলোর মধ্যে একটা... যার জন্যে লিখেছিলাম সে চলে গেছে কিন্তু কবিতাটা রয়ে গেছে... আমার নিজের লেখা একটা খুব প্রিয় কবিতা... কবিতার সাথে মিশে থাকা অনুভূতিটা আজ একইরকম স্বপ্নের মত লাগে... খুব চেনা একটা অসহ্য ভালোলাগার অনুভূতি ...

নামহীন গান

আমি পারছিনা খুঁজে নিতে নিজেকে আয়নাতে  মাঝরাতে ঘুমহীন সিগারেট ধরা আছে কার হাতে? শহরের ঠিকানায় হারিয়ে ফেলেছি আমি ঘরবাড়ি  পাহাড়ি মেঘের সাথে কখন মিলিয়ে গেছে রেলগাড়ি  এই কুয়াশায় জমা শীতে  উষ্ণতা খুঁজে নিতে  হয়তো অতর্কিতে  হারিয়ে ফেলি, আমি, নিজেকেই... আমি হাঁটছি না একা একা সন্ধ্যের রাস্তাতে  কার তাতে যায় আসে ভালবাসা হাতড়াতে ফেসবুকে থাকে-থাকে সাজানো রয়েছে সব বন্ধুরা ডেকে যায় চেনা স্বর, চেনা চেনা সুরে বাঁধা তানপুরা এই মানুষের ভিড় ঠেলে জলে ভেজা চোখ মেলে সময় পালিয়ে গেলে আবার হারিয়ে ফেলি, আমি, নিজেকেই...

ইতিহাসের পাতা থেকে

ছবি
খড়গপুর ----------- সৌম্য মাইতি  কাশীদাসী মহাভারতের কথা | পঞ্চপান্ডব বনবাসে চলেছেন | গভীর জঙ্গল | মাতা কুন্তী বড় ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নিতে চাইলেন | এদিকে ঘন জঙ্গলে থাকে নরখাদক রাক্ষস. রাক্ষসদের রাজা  হিড়িম্ব আর তার বোন হিড়িম্বা | সে ভয়ে পাণ্ডবরা তো আর দমে যাবার পাত্র নয়! কাজেই মহাবলী ভীম বললেন "আমি আছি তো! কোনো ভয় নেই" | পান্ডবরা জঙ্গলেই বিশ্রাম নিতে বসলেন , আর ভীম পাহারা দিতে লাগলেন | এদিকে নরখাদক হিড়িম্ব তো আল্হাদে আটখানা | সে চললো ভুরিভোজ সারতে | ভীম তো আর এতও সহজে তা হতে দেবেন না!তাই লেগে গেলো ভীম আর হিড়িম্বর যুদ্ধ | ভীম হিড়িম্বকে বধ করে দেহ রেখে এলেন খড়গেশ্বর শিবের মন্দিরের সামনে | তারপর? ভীম ও হিড়িম্বার প্রেম এবং বিয়ে | সেই প্রেমকাহিনী আমরা মোটামুটি সবাই জানি। তাদের সেই গান্ধর্বমতে বিয়েটাও হয়েছিল খড়গেশ্বর মন্দিরে | পঞ্চপান্ডব বেশকিছুদিন ছিলেন এই মন্দিরের পাশে | জঙ্গলের মধ্যে একটা পুরনো মন্দির | সেই মন্দিরকে কেন্দ্র করে তারপর গড়ে উঠলো ছোট্ট গ্রাম | গ্রামের নাম ? খড়গপুর !!!!! আই আই টি ক্যাম্পস থেকে ৫ কিমি উত্তরে ইন্দা বাজার রয়েছে | ...