ইতিহাসের পাতা থেকে



খড়গপুর
-----------
সৌম্য মাইতি 


কাশীদাসী মহাভারতের কথা | পঞ্চপান্ডব বনবাসে চলেছেন | গভীর জঙ্গল | মাতা কুন্তী বড় ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নিতে চাইলেন | এদিকে ঘন জঙ্গলে থাকে নরখাদক রাক্ষস. রাক্ষসদের রাজা  হিড়িম্ব আর তার বোন হিড়িম্বা | সে ভয়ে পাণ্ডবরা তো আর দমে যাবার পাত্র নয়! কাজেই মহাবলী ভীম বললেন "আমি আছি তো! কোনো ভয় নেই" | পান্ডবরা জঙ্গলেই বিশ্রাম নিতে বসলেন, আর ভীম পাহারা দিতে লাগলেন| এদিকে নরখাদক হিড়িম্ব তো আল্হাদে আটখানা| সে চললো ভুরিভোজ সারতে| ভীম তো আর এতও সহজে তা হতে দেবেন না!তাই লেগে গেলো ভীম আর হিড়িম্বর যুদ্ধ| ভীম হিড়িম্বকে বধ করে দেহ রেখে এলেন খড়গেশ্বর শিবের মন্দিরের সামনে| তারপর? ভীম ও হিড়িম্বার প্রেম এবং বিয়ে| সেই প্রেমকাহিনী আমরা মোটামুটি সবাই জানি। তাদের সেই গান্ধর্বমতে বিয়েটাও হয়েছিল খড়গেশ্বর মন্দিরে| পঞ্চপান্ডব বেশকিছুদিন ছিলেন এই মন্দিরের পাশে| জঙ্গলের মধ্যে একটা পুরনো মন্দির| সেই মন্দিরকে কেন্দ্র করে তারপর গড়ে উঠলো ছোট্ট গ্রাম| গ্রামের নাম? খড়গপুর !!!!!

আই আই টি ক্যাম্পস থেকে ৫ কিমি উত্তরে ইন্দা বাজার রয়েছে| সেখানে আজও খড়গেশ্বর শিবের মন্দিরটি রয়ে গেছে| প্রাচীন এবং ভগ্নপ্রায় মন্দিরটি কিছুদিন আগে সংস্কার করা হয়েছে |

১. হিড়িম্বেশ্বরী কালী

শ্রী শ্যামাপদ ভৌমিক তাঁর "ইতিহাস ও সংস্কৃতি" [প্রগ্রেসিভ পাবলিশার্স, ২০০৯] বইতে লিখেছেন, বিষ্ণুপুরের রাজা খড়গমল্ল ৮৪১ সালে এই মন্দিরটি বানিয়েছিলেন| তাই মন্দিরের নাম খড়গেশ্বর। এদিকে সেই সময় বাংলায় পাল বংশের রাজত্বকাল চলছে অন্য কোনো রাজা নিজের নামে মন্দির বানিয়ে যাবে এটা পরাক্রমী পাল রাজা দেবপাল (৮১০-৮৫০ সাল) মেনে নেবার পাত্র ছিলেন না | তাই অনেক ঐতিহাসিক বিশ্বাস করেন খড়গসিং পাল  নামে দেবপালের কোনো রাজকর্মচারী মন্দিরটি বানিয়েছিলেন |
মহাভারতের সমসাময়িক আরো একটি মন্দির রয়েছে ইন্দাতেই | সেটি হিড়িম্বেশ্বরী কালীমন্দির রাক্ষসী হিড়িম্বা নাকি এখানেই রোজ কালীর পুজো করতে আসতেন
মহাভারতের রূপকথা তো কাশীরাম দাস নিজের মত করে লিখেছিলেন ষোড়শ শতকে। সত্যিকারের ইতিহাস অনেকটাই টা থেকে ধারনা করা যায়। জঙ্গলের মধ্যে আদিবাসীদের বাস | জায়গাটা সাঁওতাল পরগনার সীমান্তবর্তি এলাকা | এই শিকারজীবী আদিবাসীরাই অনার্য বা রাক্ষস বলে গণ্য হত আর্যদের কাছে | আর একটা ব্যাপারও বলা উচিত, কালী ছিলেন অনার্যদের দেবতা | তাই তো তিনি কালী কালিকাময়ী হৃতসর্বস্বা নগ্নিকা | মহাদেব শিব-ও অনার্যদের দেবতা | তাই সেই প্রাচীন শিব মন্দির, কালীমন্দিরের কথা নিশ্চয়ই মহাভারতের কথক জানতেন। কাজেই কিংবদন্তিতে সেই জঙ্গল আর আদিবাসীদের মন্দির ঘিরেই আদিবাসীদের গ্রাম রাক্ষসরাজ হিড়িম্বর রাজত্ব হয়ে উঠেছিলো | আর এভাবেই ইতিহাসের পাতায় উঠে এলো প্রাচীন খড়গপুর | এই মন্দিরগুলো পরে সংস্কার করা হয়েছে | আদি মন্দিরগুলোর কোনো হদিস পাওয়া যায় না | কেন যায়না, তারও একটা ইতিহাস আছে | সেই ইতিহাসের নাম কালাপাহাড় |

২. খড়গেশ্বর শিব মন্দির
মধ্যযুগে ভারতের অনেকাংশেই মুসলমান শাসন ছিল৷ কেউ বা সম্রাট কেউ দেশীয় রাজা বাদশা আবার কেউ স্থানীয় জমিদার ৷ তেমনই একজন হলেন বাংলা ও বিহারের শাসনকর্তা সুলেমান কারনানী৷ ইনি বাঙালী নন, নামটা সিন্ধী হলেও জাতিতে ইনি ছিলেন আফগান ৷ বাংলায় ইসলাম ধর্মের প্রচারে উৎসাহী ছিলেন ইনি ৷ তাঁর সেনাপতির নাম ছিল কালাপাহাড়| কথিত আছে কালাপাহাড়ের আসল নাম রাজীব লোচন রায়, তিনি ছিলেন উত্তরবঙ্গের এক বাঙালী বাহ্মণ পরিবারের সন্তান ৷ তিনি বিদ্যান ও বুদ্ধিমানও বটে ৷ তার কর্মজীবন শুরু কিভাবে হয়েছিল সেকথা ইতিহাসে পাওয়া যায় না৷ পরে গৌড়ের সেনানীতে যোগ দেন ইনি৷ সৈন্য পরিচালনা ও যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শীতা দেখান খুব শীঘ্রই৷ শাসক সুলেমান কারনানীর নজরে আসতে তাই বেশী সময় লাগেনি ৷ কারনানী এবার তার সেরা চালটা চাললেন ৷ রাজীবকে বললেন তোমার সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে দিতে চাই ৷ এছাড়া তোমাকে আমার সেনাপতি করতে চাই ৷ তবে একটা শর্ত আছে৷ তোমাকে গৃহত্যাগ করতে হবে ও মুসলমান হতে হবে ৷ রাজীব লোচন লোভে পড়ে গেলেন ৷ একদিকে গৌড়ের সেনাপতির আসন ও সুন্দরী শাহাজাদী এবং অন্যদিকে তার পিতৃকুল ৷ শেষ পর্যন্ত তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে শাহাজাদীর পানি গ্রহণ করলেন ৷ কিন্তু এতদিনের সনস্কার ঝেড়ে ফেলতেও পারলেন না| কিছুদিনের মধ্যেই মোহভঙ্গ হলো এবং ফিরতে চাইলেন হিন্দু সমাজে| বাংলা, উড়িষ্যার ব্রাহ্মণ সমাজ তখন গোঁড়ামিতে আচ্ছন্ন | উড়িষ্যাতে রীতিমতো অপমান করে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাকে সেনাপতি মসজিদে গিয়ে প্রতিজ্ঞা করলেন শেষ দেখে ছাড়বেন | এরপর ব্রাহ্মণদের গোঁড়ামিকে শাস্তি দেবার জন্য উগ্র মুসলমান হয়ে ওঠেন তিনি ৷ গৌড়ের সেনার রাশ তার হাতে, স্বয়ং শাসক তার শ্বশুর তাই প্রতিশোধ নেবার অসুবিধা নেই তার ৷নতুন নাম নিলেন কালাপাহাড়। ধ্বংশের লীলা শুরু করে দিলেন পূর্ব্ব ভারতের দিকে দিকে ৷ ব্রাহ্মণদের ওপর বিদ্বেষের আগুনের দাবানলে আহুতি দিলো হিন্দু মন্দিরের কারুকার্য, ভাস্কর্য ও কলাকৃতি ৷ সবথেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পুরীর জগন্নাথ মন্দির, কোনারকের সূর্যমন্দির, গৌহাটির কামাখ্যা মন্দির ইত্যাদি | সাথে অবশ্যই ভারতীয় শিল্পকলা৷কারণ সেইসব মন্দিরের স্থাপত্য।  তাই আজ মধ্যযুগের অনেক ইতিহাস আমাদের কাছে অজানা থেকে গেছে | যাইহোক, এই কালাপাহাড় ভেঙেছিলেন খড়গপুরের প্রাচীনতম মন্দিরদুটি |
এবার মহাভারতের সময় থেকে আমরা এগিয়ে আসি আরো পরবর্তী সময়ে | সেভেন্টিনথ সেঞ্চুরি | আদিবাসীদের গ্রাম থেকে খড়গপুর ততদিনে বর্ধিষ্ণু গ্রামবাংলায় পালবংশ প্রায় শেষ। খড়গপুর এখন আর বাংলার অংশ নয়। উড়িষ্যার বালেশ্বর,দাঁতন, মেদিনীপুরের কাঁথি, তমলুক, পাঁশকুড়া, হলদিয়া এইসমস্ত জায়গা নিয়ে একতা নতুন সাম্রাজ্য গরে উঠেছিল সেই সময়। সাম্রাজ্যের নাম? হিজলি ।
তাম্রলিপ্ত বন্দর তখন মৃতপ্রায়। আই আই টি ক্যাম্পাস থেকে প্রেমবাজার গেট দিয়ে সোজা ৬-৭ কিমি গেলে কেলেঘাই নদীর দেখা পাওয়া যাবে। আজ দেখলে মনে হয় একটা সরু নালা। অথচ সেসময় এ  নদীর ছিল ভরা যৌবন। বড় বড় নৌকো যেত নদীতে। কেলেঘাই থেকে কাঁথির দিকে গেলে পড়বে  রসুলপুর নদী। সপ্তদশ শতকে সেই নদীর তীরে গরে উঠছে নতুন বন্দর। অনেকে বলেন আকবরের সেনাপতি রাজা মান সিংহ এই বন্দর তৈরি করেছিলেন। কেউ বলেন এ মানসিংহ অন্য কেউ।  চারিদিকে হিজলের জঙ্গল বলে জায়গার নাম হয়েছিল হিজলি। এখান থেকে নদীপথে যাওয়া যেত  নানা জায়গায়। কলকাতা শহরের জন্ম হয়নি তখনও। কেলেঘাই আর হলদি নদীর সাথে খাল টেনে জোড়া হল হিজলি বন্দরকে। ১৬২৮ সালে সেই বন্দরকে ঘিরে তৈরি হল হিজলি সাম্রাজ্য। এর আগে  উড়িষ্যার গজপতি রাজারাই রাজত্ব চালাতেন এখানে। বন্দর থাকায় বাণিজ্যে এই জায়গাটা দ্রুত উন্নত হতে থাকল। বাণিজ্যের সাথে এলো অর্থনৈতিক জৌলুষ। কাজেই অন্য রাজারা আক্রমণ হানল হিজলিতে। তাজ খান নামে এক মুসলিম সুলতান জয় করল হিজলি তারপর কুশান এবং পাল রাজারা আক্রমণ করলেন। দিল্লির মসনদে মুঘল বাদশাহ শাহজাহানতিনি-ই বা ছাড়বেন কেন এরকম বাণিজ্য-বন্দরকে? আবার যুদ্ধ। এবং হিজলি হয়ে গেল মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্গত। কিন্তু এতবার রাজা বদল হলেও, হিজলি বন্দরের গুরুত্ব বা গরিমা কোনটাই ম্লান হল না।
১৬৮৭ সাল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হানা দিয়েছে ভারতে। তাদের চাই নতুন বন্দর যেখানে তারাই শুধু একচেটিয়া বাণিজ্য করতে পারবে। ক্যাপ্টেন নিকলসন প্রথম চেষ্টা করেন হিজলি বন্দর দখল করার। তারপর তিনি রণে ভঙ্গ দিলে, আর এক তরুণ ইংরেজ সাহেব মাত্র ৪০০জন সেপাই নিয়ে দখল করতে পারলেন হিজলি বন্দর। মুঘল বাদশা অউরংজেব কিছুদিনের মধ্যেই প্রচুর সেনা নিয়ে তাড়া করলেন সেই সাহেবকে। সাহেবের সেনাবাহিনী একেবারে ধরাশায়ী হয়ে গেল সেই আক্রমণে। সাহেব তো প্রাণ হাতে পালিয়ে গেলেন রূপনারায়ণ নদীর ওপারে উলুবেড়িয়া নামে একটা গ্রামে। হিজলি আবার ফিরে এলো মুঘলদের হাতে।
৩. ভারতের প্রথম টেলিগ্রাফের পোস্ট 



এদিকে সেই সাহেব? তিনি আরও পূর্বে হুগলী নদীর তীরে চলে গেলেন। সেখানে কিনলেন তিনটি গ্রাম, সুতানুতি, গোবিন্দপুর আর কলিকাতা।  ১৬৯৮ সালে, নতুন বন্দর তৈরি করলেন সেই সাহেব। হ্যাঁ, তাঁর নাম, জব চার্নক !
তারপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি থাবা বসাল গোটা ভারতবর্ষে। বাদ গেল না হিজলিও। ১৭৫৪ সালে হিজলি এলো ইংরেজদের হাতে। মাঝখানে পর্তুগিজ উপনিবেশ হিএবেও কিছুদিন থাকতে হয়েছিল হিজলিকে। ইংরেজরা হিজলি বন্দরটির ঠিক পাশেই তৈরি করে আরও একটি বন্দর, তার নাম খেজুরি। খেজুরি থেকে লন্ডনে যাবার জাহাজ ছাড়ত একসময়। রাজা রামমোহন রায় এই খেজুরি বন্দর থেকেই জাহাজে উঠেছিলেন ১৮২৯সালে। ১৮৫২ সালে ভারতবর্ষের প্রথম টেলিগ্রাফ অফিস তৈরি হয় খেজুরি আর কলকাতায়।  প্রথম তারবার্তা যায় খেজুরি থেকে কলকাতার জিপিও। ১৮৬৪ সালে এক ভয়াবহ সাইক্লোনে ধংস হয়ে গেল এই বন্দরগুলি।
৪. খড়গপুর স্টেশন 
তারপর হিজলির ইতিহাসের ঔজ্জ্বল্য এখানেই শেষ। ১৮৯৯ সালে তৈরি হল খড়্গপুর রেল-স্টেশনদক্ষিণ ভারত ও পশ্চিম ভারতের সাথে যোগাযোগের উল্লেখযোগ্য জাংশন হিসেবে খড়গপুর আস্তে আস্তে হয়ে উঠতে থাকল একটি রেলশহর। বিং শ শতকের শুরু। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজেছে সারা পৃথিবীজুড়ে। কলকাতায় ইংরেজদের ঘাঁটিতে আক্রমণ হতে পারে যেকোনো মুহূর্তে। যুদ্ধের কৌশল ইংরেজরা ভালই বোঝে। কাজেই কলকাতায় সমস্ত সামরিক শক্তি ব্যয় করলে আখেরে ক্ষতি হবে। কারন খুব সহজ। শত্রুপক্ষ কলকাতায় আক্রমণ করে একবার সবকিছু ধ্বংস করে দিলেই তো সব শেষ। কাজেই কলকাতার আশেপাশে কোথাও সরাতে হবে সামরিক শক্তি। নজর পড়ল খড়গপুরের দিকে। শালুয়া এবং কলাইকুন্দায় বানানো হল সেনা ছাউনি। এত সামরিক বাহিনী, তাদের সরঞ্জাম আনার জন্য চাই  অনেক ট্রেন। কিন্তু অত ট্রেন চালানোর বাড়তি খরচ কমানো চাই। কাজেই তৈরি হল দীর্ঘতম প্ল্যাটফরমলম্বা ট্রেন বোঝাই সামরিক বাহিনী আর তাদের রসদ পৌঁছতে পারা গেলো একবারেই। এরপর যুদ্ধবিমানগুলোর ঘাঁটি হিসেবেও পরবর্তীকালে গড়ে তলা হল জায়গাগুলিকে।



৫. হিজলী ডিটেনশন ক্যাম্প 
যুদ্ধ শেষ। এত পরিকাঠামোকে অন্য কিভাবে কাজে লাগান যায়? ১৯৩০ সালে ইংরেজরা বানাল হিজলি ডিটেনশন ক্যাম্প। রাজবন্দীদের আনা হত এখানে। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন মামালার আসামিদের অনেককেই এখানে বন্দি করে রাখা হয়েছিলো। ১৯৩১ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর এই বন্দিশালায় নির্বিচারে গুলি করে মারা হয়েছিল অনেক ভারতীয় নারী-পুরুষকে, যাদের অপরাধ ছিল স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন দেখা। বিপ্লবী তারকেশ্বর সেনগুপ্ত ও সন্তোষ মিত্র ছিলেন তাদের মধ্যে। সারা দেশ গর্জে উঠেছিল রাগে, ঘেন্নায়। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু মিছিল করে এসে নিয়ে গিয়েছিলেন শহীদদের মরদেহ। মহাত্মা গান্ধী সহ বহু নেতা পরবর্তীকালে এখানেপ্রতিবাদ জানাতে আসেন। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কলকাতা ময়দানে মনুমেন্টের পাদদেশে যে বিশাল জনসভা হয় তাতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।  হিজলির এই নৃশংস ঘটনার ধিক্কার জানিয়ে তিনি লিখেছিলেন বিখ্যাত একটি কবিতা, “যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু নিভাইছে তব আলো,/ তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছও তুমি কি বেসেছ ভালো?”
১৯৩৭ সালে সাময়িকভাবে হিজলি বন্দীশিবির বন্ধ রাখা হয়। ১৯৪০ সালে অনেক সত্যাগ্রহীকে এখানে বন্দি রাখা হয়েছিলো। ১৯৪২ এর ভারতছাড় আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়ল। পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হল এটিকে।

স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতে তখন দরকার নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রস্তাব আসে জমি  দেবার। ডঃ বিধানচন্দ্র রায় এই বন্দী শিবিরকেই ভারতের শ্রেষ্ঠ কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বানানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নেহেরুকেতাই আজও আইআইটি খড়গপুরের সঙ্গে জুড়ে আছে তাঁর সেই ঐতিহাসিক উক্তি “এইখানে হিজলি বন্দীশিবির দাঁড়িয়ে রয়েছে এক স্মৃতিস্তম্ভ হয়ে, যা আজকের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকার করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আগামীদিনের পথে। এই ছবি ভবিষ্যৎ ভারতবর্ষের প্রতীক হয়ে উঠুক”...

৬. ওল্ড ক্যাম্পাস 

             

তথ্যসূত্রঃ


      .   "ইতিহাস ও সংস্কৃতি", শ্রী শ্যামাপদ ভৌমিক, [প্রগ্রেসিভ পাবলিশার্স, ২০০৯]
      .   “মেদিনীপুরের ইতিহাস”, কমল চৌধুরী সম্পাদিত, [দে'জ পাবলিশার্স, ২০১১]
      .    http://www.iitkgp.ac.in/institute/nehru.php
      .    http://www.contai.info
      .    Wikipedia

      .    sonartoree.blogspot.in/2011/03/blog-post.html

      .    বিভিন্ন blog



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

tukro shorot-1

কুঁচো-কাঁচা দুঃখকথা......

pajore somudrer dheu .....